বুদ্ধিমানের বিচার
📖 গল্পের নাম: বুদ্ধিমানের বিচার
লেখক: নাজীব মাহফুজ
প্রকাশকাল: ১৯৬০-এর দশক
মূল ভাষা: আরবি
বাংলা অনুবাদে সংক্ষিপ্ত নাম: "বুদ্ধিমানের বিচার"
এই গল্পটি মিশরের কায়রো শহরের এক পাড়া থেকে শুরু হয়, যেখানে বাস করতেন এক চতুর ও রসিক মানুষ — জুহা। তার বুদ্ধি ছিল অসাধারণ, কিন্তু তিনি সব সময় সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রসাত্মক উপায়ে প্রতিবাদ করতেন।
একদিন পাশের দোকানদার হামিদ অভিযোগ করল যে, জুহা তার রান্নার গন্ধ চুরি করছে!
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছ! রান্নার গন্ধ চুরি!
জুহা গরীব মানুষ। প্রতিদিন রুটি কিনে সেই দোকানের পাশেই বসে গরম বিরিয়ানির গন্ধে রুটি খেত। হামিদ রেগে গিয়ে বিচারকের কাছে অভিযোগ করে যে জুহা তার খাবারের গন্ধ চুরি করছে, তাই গন্ধের দাম দিতে হবে।
আদালতে বিচারের দৃশ্য:
বিচারক (একজন জ্ঞানী মানুষ) বিষয়টি শুনে হেসে বললেন,
“তুমি খাবার রান্না করো এবং সে তা দেখে খায়নি, বরং গন্ধ শুঁকে খেয়েছে?”
হামিদ বলল, “হ্যাঁ, গন্ধ শুঁকে আমার মেহনতের অপচয় করেছে। এটা চুরি নয় তো কী?”
তখন বিচারক জুহাকে বললেন,
“তুমি কি কিছু অর্থ এনেছো?”
জুহা একটি ছোট থলিতে কয়েন রেখেছিল, সেটি বের করে দেখাল।
বিচারক বললেন,“এই থলি নাড়াও।”
জুহা থলি নাড়িয়ে কয়েনের শব্দ করায় বিচারক বলেন,
“এই শোনো হামিদ, তুমি রান্নার গন্ধ দিয়েছ, আর সে দিলো তোমাকে টাকার শব্দ! এবার উভয়ে খুশি হও।”
পুরো আদালত হাসিতে ফেটে পড়ে। কিন্তু এই হাসির মাঝেই লুকিয়ে ছিল এক শক্ত বার্তা।
গল্পের শিক্ষা:
সত্যিকারের ন্যায়বিচার সব সময়ই যৌক্তিক ও মানবিক হয়।
লোভী মনোভাব মানুষের সম্মান নষ্ট করে।
রসিকতা দিয়ে সমাজের ভুলকে সামনে আনা যায়।
বুদ্ধি আর হাস্যরস—দু’টিই যদি একসাথে থাকে, তা সমাজ বদলে দিতে পারে।