শূন্য থেকে সাম্রাজ্য: জ্যাক মা’র অনন্য উত্থান

06 Oct 2025 03:06:15 PM

শূন্য থেকে সাম্রাজ্য: জ্যাক মা’র অনন্য উত্থান

  • মোঃ জয়নাল আবেদীন 

  চীনের হাংঝো শহরের এক ছোট্ট কোণে ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ সালে জন্ম নিল এক ছেলে, যার নাম জ্যাক মা। তার বাবা মা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে ছিলেন—বাবা একটি ছোট বইয়ের দোকানে কাজ করতেন এবং কবিতা ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন, মা ছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা। পরিবারে অর্থ সীমিত হলেও ভালবাসা, অধ্যবসায় ও নৈতিকতা ছিল অতুলনীয়।

চারপাশে দারিদ্র্য, সীমিত সুযোগ-সুবিধা আর কঠোর বাস্তবতা—সবই ছিল তার শৈশবের সঙ্গী। তবে ছোট জ্যাক অন্যদের মতো সাধারণ জীবন চেয়েছিল না। সে স্বপ্ন দেখত, বড় স্বপ্ন।

শৈশবেই তার জীবনে প্রথম শিক্ষা আসে অধ্যবসায়ের। ১৯৭০-এর দশকে, ছোট্ট জ্যাক স্কুলে প্রথম জীবন শিক্ষা শুরু করল। বাবা-মা তাঁকে দেখালেন, “পরিশ্রম আর ধৈর্যই মানুষের আসল শক্তি।” এই শিক্ষা তাকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শক্তি দেয়।

স্কুলে ইংরেজি শেখার জন্য সে প্রতিদিন সকালে উঠে শহরের হোটেলে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলত। যত মানুষকে দেখত, সে তাদের সঙ্গে কথা বলার সাহস তৈরি করত। কেউ তাকে হাসত, কেউ অবহেলা করত, কিন্তু জ্যাক তা ভাবত না—তার দৃষ্টি ছিল একটিমাত্র লক্ষ্য: নিজেকে পরিপূর্ণভাবে গড়ে তোলা।

তাঁর জীবনের প্রথম চ্যালেঞ্জ শুরু হয় তখন, যখন সে বারবার ব্যর্থ হয়। স্কুলে ভালো ফল করতে পারল না। ১৯৮০-এর দশকে কলেজ শেষ করার পর জ্যাক মা পরিবারকে সমর্থন দিয়ে শুরু করলেন তার স্বপ্নপূরণের যাত্রা। ১৯৮৮ সালে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ঝাং ইয়িং-এর সঙ্গে। পরবর্তীতে তাদের দুই সন্তান জন্ম নেয়। পরিবার সবসময় তার পাশে ছিল—চাকরি খোঁজা, ব্যর্থতা এবং ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জের সময়।

জ্যাক মা ১৯৮০-এর দশকে হাংঝো শহরে কলেজ শেষ করার পর চাকরির সন্ধানে বের হন। কিন্তু চাকরির জন্য জীবন কঠিন পরীক্ষার মতোই ছিল। ১৯৮৩ সালে, প্রথম চাকরির জন্য আবেদন করলেও তাকে প্রত্যাখ্যাত করা হয়। এরপরের কয়েক বছর ধরে, সে ৩০টিরও বেশি চাকরির আবেদন করে, কিন্তু সবগুলোই বাতিল হয়। একবার ১৯৮৫ সালে কেসি মোরি নামের হোটেলে চাকরির জন্য গেলেও তাকে সরাসরি বাতিল করে দেওয়া হয়। বন্ধু-বান্ধব হতাশ হলো, পরিবার চিন্তিত হলো, কিন্তু জ্যাক কখনও হাল ছাড়লেন না।

প্রত্যাখ্যানগুলো শুরুতে হতাশার কারণ হলেও, জ্যাক মা তাদেরকে শিক্ষার সুযোগ হিসেবে দেখতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, “ব্যর্থতা মানে শেষ নয়, এটি শিখার সুযোগ।” তার এই দৃষ্টিভঙ্গি তাকে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী চিন্তা করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল।

Alibaba-এর সূচনা

১৯৯৫ সালে, জ্যাক মা যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেখলেন, কিভাবে মার্কিন ব্যবসায়ীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ব্যবসা করছে। চীনে তখন ইন্টারনেট খুবই নতুন। তিনি বুঝলেন, চীনের ছোট ব্যবসায়ীরাও অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে পারলে ব্যবসা সম্প্রসারণ হবে।

প্রাথমিকভাবে চিন্তাটি ছোট একটি দল নিয়ে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ১৯৯৯ সালে, জ্যাক মা ১৮ জন বন্ধু ও সহকর্মী নিয়ে হাংঝোতে ছোট একটি অফিসে Alibaba প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের লক্ষ্য ছিল, চীনের ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য একটি অনলাইন বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।

Alibaba-এর প্রতি তার বিশ্বাস ছিল দৃঢ়: “যদি আমরা মানুষকে সহজ, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী উপায়ে অনলাইনে ব্যবসা করার সুযোগ দিই, তবে ব্যর্থতা নয়, সাফল্য আসবেই।”

১৯৯৫ সালে, যখন সে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেল, তখন জীবনের পথ নতুনভাবে উন্মোচিত হলো। এই সফরের মাধ্যমে সে দেখল, মার্কিন ব্যবসায়ীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে কিভাবে ব্যবসা করে। সে বুঝল, চীনের বাজারে এই ধারণা সম্পূর্ণ নতুন হতে পারে। সেই মুহূর্তে তার মনে বাজল: “আমার দেশেও এটি সম্ভব।”

পরবর্তী বছরগুলো, অর্থাৎ ১৯৯৫–১৯৯৯ সালের মধ্যে, জ্যাক মা একাধিক ব্যবসায়িক চেষ্টা করল। শুরুতে খুবই ছোট একটি অফিসে, মাত্র কয়েকজন বন্ধু নিয়ে। কিন্তু তার প্রাথমিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলো। অনেক মানুষ তাকে বলল, “চীনে ই-কমার্স কখনও কাজ করবে না। তুমি ব্যর্থ হবে।”

যদিও ব্যর্থতা তাকে হতাশ করত, জ্যাক মা বিশ্বাস করতেন: “আমি ব্যর্থ হইনি, আমি শিখছি।” তিনি দিনে ১২–১৪ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম করত। সীমিত সম্পদ, ছোট টিম, এবং প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জ—সবকিছুই তাকে শক্তিশালী করে। এই প্রাথমিক ব্যর্থতা ও সংগ্রামের দিনগুলোই তাকে শিখিয়েছিল অধ্যবসায়, ধৈর্য এবং সঠিক কৌশলের গুরুত্ব।

 ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে, জ্যাক মা তার কয়েকজন বন্ধু নিয়ে হাংঝোতে ছোট্ট একটি অফিসে বসে Alibaba প্রতিষ্ঠা করলেন। তখন তার টিমে মাত্র ১৮ জন মানুষ ছিলেন। তাদের সম্পদ সীমিত, অভিজ্ঞতা কম, কিন্তু স্বপ্ন বিশাল।

প্রথম বছরের কাজ সহজ ছিল না। চীনের ছোট ব্যবসাগুলো অনলাইনে ব্যবসা করতে আগ্রহী ছিল না। অনেকেই বলত: “ইন্টারনেট ব্যবসা আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা বিশ্বাস করি না।” কিন্তু জ্যাক তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সাক্ষাৎ করতেন, তাদের বোঝাতেন এবং ধৈর্য ধরে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন।

২০০০ সালের জুলাই মাসে, Alibaba প্রথম বড় বিনিয়োগ পায়। SoftBank এবং অন্য কয়েকজন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী তাদের সম্ভাবনায় বিনিয়োগ করলেন। এটি ছিল Alibaba-এর জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের টিম বৃদ্ধি পেতে শুরু করল এবং প্রযুক্তিগত উন্নতি সম্ভব হলো।

২০০৩ সালের মে মাসে, জ্যাক মা এবং তার টিম Taobao লঞ্চ করলেন—একটি নতুন অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে চীনের ছোট ব্যবসাগুলো সহজে পণ্য বিক্রি করতে পারত। Taobao চালু হওয়ার পর মানুষ প্রথমে সন্দিহান ছিল, কিন্তু জ্যাক মা বিশ্বাস করতেন: “সঠিক সময়ে, সঠিক ধারণা, এবং সঠিক পরিষেবা—সবই মানুষকে আকৃষ্ট করবে।”

এই বছরগুলো ছিল Alibaba-এর প্রথম উত্থানের বছর। প্রতিদিন নতুন চ্যালেঞ্জ আসত, কিন্তু জ্যাক মা কখনো হাল ছাড়েননি। তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ছোট পদক্ষেপের ধারাবাহিকতা একদিন বড় সাফল্যে পরিণত হবে।

এভাবেই ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত জ্যাক মা-এর যাত্রা চীনের ছোট অফিস থেকে শুরু করে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত পৌঁছালো। এই প্রথম উত্থানই তার সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করল।

২০০৩ সালে, Taobao লঞ্চের পরও জ্যাক মা-এর পথ সহজ ছিল না। চীনের ই-কমার্স মার্কেট তখন খুব নতুন। মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করতে ভয় পাচ্ছিল। অনেক ব্যবসায়ী বলছিলেন, “ইন্টারনেট ব্যবসা ঝুঁকিপূর্ণ, এটি কখনও সফল হবে না।”

তবে জ্যাক মা হতাশ হলেন না। তিনি জানতেন, “চ্যালেঞ্জ আসলেই সুযোগের নতুন দরজা।” তাই তিনি তার দলকে অনুপ্রাণিত করলেন—তাদেরকে বললেন, ছোট ছোট সমস্যাকে বড় বাধা মনে না করতে।

তাদের প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সঠিক অর্থ ও বিনিয়োগের অভাব। ব্যাংক ঋণ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিনিয়োগকারীরা সন্দিহান। তবে জ্যাক মা হাল ছাড়লেন না। তিনি দিনে ১২–১৪ ঘণ্টা কাজ করতেন, তার দলের সঙ্গে প্রতিনিয়ত নতুন কৌশল ও পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতেন।

২০০৪ সালে, Alibaba প্রথম আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ পায়, যা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়ে দেয়। সেই সাথে প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধান করা শুরু হয়, এবং গ্রাহকরা ধীরে ধীরে অনলাইনে কেনাকাটার দিকে আগ্রহী হতে শুরু করে।

২০০৫ সালে, Taobao-র সাফল্য প্রথমবারের মতো দৃশ্যমান হলো। চীনের ছোট ব্যবসায়ীরা অনলাইনে তাদের পণ্য বিক্রি করতে শুরু করল। প্রতিদিনের নতুন চ্যালেঞ্জ, প্রত্যাখ্যান ও সমস্যার মধ্যেও জ্যাক মা ও তার টিমের অধ্যবসায় অবিচল ছিল।

এই বিপর্যয়পূর্ণ দিনগুলোই তাকে শিখিয়েছিল—“ব্যর্থতা আমাদের শক্তিশালী করে এবং সঠিক পথ দেখায়।” চ্যালেঞ্জকে স্বাগত জানানো, সমস্যা সমাধানের ধৈর্য, এবং দলে একতা—এগুলোই ছিল তার প্রথম বড় সফলতার মূল চাবিকাঠি।

২০০৬ সালের দিকে, Alibaba এবং Taobao ক্রমেই চীনের বাজারে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করল। জ্যাক মা-এর কঠোর পরিশ্রম, দৃষ্টিভঙ্গি এবং দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ফল দিতে শুরু করল। চীনের ছোট ব্যবসায়ীরা অনলাইনে পণ্য বিক্রি করে ভালো আয় করতে লাগল।

জ্যাক মা তখন বুঝতে পারলেন, তাদের সাফল্য শুধুমাত্র চীনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারেও পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখলেন। ২০০৭ সালে, Alibaba প্রথমবারের মতো বিদেশি বিনিয়োগকারী ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানদের সঙ্গে যোগাযোগ করল। এর ফলে কোম্পানির প্রযুক্তিগত উন্নতি, অর্থায়ন এবং বিশ্বসাহায্য পাওয়া সম্ভব হলো।

২০০৯–২০১০ সালের মধ্যে, Alibaba চীনের ই-কমার্সে অমোঘ শক্তি হয়ে উঠল। জ্যাক মা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে, সংবাদপত্রে এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় পরিচিত হয়ে উঠলেন। মানুষ তাঁর সাফল্যকে শুধু ব্যবসায়িক নয়, বরং অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ হিসেবেও দেখল।

এ সময় জ্যাক মা বারবার বলতেন:
“ব্যর্থতা কখনো শেষ নয়। ধৈর্য, অধ্যবসায়, এবং আত্মবিশ্বাস থাকলেই সাফল্য আসে।”

তার এই সাফল্য শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, বরং চীনের ছোট ব্যবসায়ীদের জীবন বদলে দিল। তিনি দেখালেন, কিভাবে সীমিত সম্পদ, বিপর্যয় এবং চ্যালেঞ্জকে জয় করে একটি সাম্রাজ্য গড়া যায়।

এই উত্থানকাল ছিল জ্যাক মা’র জীবনের একটি বড় মোড়, যেখানে প্রথমবারের মতো সে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, বিনিয়োগ, এবং জনপ্রিয়তার স্বাদ পেল। এবং এই সময়টাই প্রতিষ্ঠা করল Alibaba-কে বিশ্বের অন্যতম বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম হিসেবে।

 

দর্শন ও শিক্ষা

জ্যাক মা-এর জীবন শেখায়, যে সাফল্য কোনো এক রাতের ফল নয়। সে বারবার ব্যর্থ হয়েছে, মানুষ তাকে অবমূল্যায়ন করেছে, কিন্তু কখনো হাল ছাড়েনি। তার দর্শনের মূল বিষয়গুলো হলো:

  • ব্যর্থতা শেখার অংশ: জ্যাক মা বলেন, “আমি ব্যর্থ হইনি, আমি শিখছি।” প্রতিটি ব্যর্থতা তাকে শক্তিশালী করে এবং সঠিক পথ দেখায়।

  • ধৈর্য ও অধ্যবসায়: ছোট পদক্ষেপের ধারাবাহিকতা শেষ পর্যন্ত বড় সাফল্য এনে দেয়।

  • দলের শক্তি: তিনি কখনো একাই এগোননি; তার দল ও বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করেই সফলতা এসেছে।

  • দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন: নতুন চিন্তা, সৃজনশীল ধারণা, এবং অনলাইনের সম্ভাবনা চ্যালেঞ্জকে সুযোগে পরিণত করেছে।

জ্যাক মা-এর জীবন শিক্ষায় ভরা—এটি শুধু ব্যবসায়িক কাহিনি নয়, বরং জীবনযাপনের দর্শন।

জ্যাক মা-এর গল্প আমাদের শেখায়, যে স্বপ্নকে সীমাবদ্ধতা, ব্যর্থতা বা আর্থিক অভাব আটকাতে পারে না। শূন্য থেকে সাম্রাজ্য গড়ে ওঠার পেছনে থাকে দৃঢ় সংকল্প, অধ্যবসায়, সৃজনশীল চিন্তা, এবং কখনো হাল না ছাড়ার মনোভাব।

তিনি প্রমাণ করেছেন, যে কেউ, যেখানে কেউ জন্ম নিয়েছে বা কতটা ব্যর্থ হয়েছে, সে চাইলে পৃথিবীতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। জ্যাক মা শুধু Alibaba-এর প্রতিষ্ঠাতা নয়, বরং প্রেরণার এক অমোঘ প্রতীক।

মোটিভেশনাল বার্তা:

“স্বপ্ন দেখো, কঠোর পরিশ্রম করো, ব্যর্থতা থেকে শিখো, এবং কখনো হাল ছাড়ো না। শূন্য থেকেও তুমি সাম্রাজ্য গড়তে পারবে।”