আল-আদল (ন্যায়বিচার)

24 Jul 2025 04:53:12 AM

গল্পের নাম: "আল-আদল" (ন্যায়বিচার)

লেখক: তাওফিক আল-হাকীম
প্রকাশকাল: ১৯৪০ দশক
মূল ভাষা: আরবি
বাংলা অনুবাদে সংক্ষিপ্ত নাম: "ন্যায়বিচারের পরীক্ষা"

 

গল্পের সারসংক্ষেপ:

মিশরের এক প্রাচীন রাজ্যে, একজন ন্যায়পরায়ণ রাজা শাসন করতেন। তিনি মনে করতেন, মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই রাজত্বের মূল দায়িত্ব। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি দেখতে পেলেন যে, তার বিচারকরা অনেক সময় মানুষকে সত্যিকারের ন্যায় না দিয়ে নিয়ম-কানুনের খোলসে বন্দি করে রাখছে।

 

তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজেই ছদ্মবেশে শহরের সাধারণ মানুষের জীবনে কীভাবে আইন প্রয়োগ হচ্ছে তা জানবেন। তাই একদিন তিনি একজন দরিদ্র কৃষকের ছদ্মবেশে বিচারালয়ে এলেন, যেখানে এক গরীব মজুর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে রাজা (ছদ্মবেশধারী কৃষক) তার একটি ছাগল চুরি করেছে।

 

রাজা বিস্মিত! কারণ তিনি তো নিজেই ছাগল চুরি করেননি। কিন্তু বিচারক এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে। সাক্ষ্য মিথ্যা হলেও নিয়ম অনুযায়ী রাজার পক্ষের কোনো প্রমাণ না থাকায়, বিচারক রাজার (ছদ্মবেশধারী কৃষকের) বিরুদ্ধে রায় দেয়।

 

রাজা বিচারকের এই সিদ্ধান্ত শুনে চুপ থাকেন না। তিনি তার আসল পরিচয় প্রকাশ করেন এবং বলেন:


“আজ আমি নিজেই ভুক্তভোগী, আর তোমাদের বিচার আমার প্রতি অন্যায় করেছে। যদি সাধারণ একজন দরিদ্র কৃষক এই অবস্থায় পড়ত, তবে তার কী পরিণতি হতো?”

 

সেই বিচারক লজ্জিত হন এবং বলেন:


“আমরা আইন মেনে বিচার করি, কিন্তু ন্যায়বিচার সব সময় কি আইনের মধ্যে থাকে?”

 

গল্পের মূল বার্তা:


আইন ও ন্যায়বিচার সব সময় এক জিনিস নয়।

একজন শাসকের উচিত, শুধু আইন নয়, মানুষের মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতাকে মাথায় রেখে বিচার করা।

কখনো কখনো নিয়ম নয়, বরং প্রজ্ঞা ও সহানুভূতিই সত্যিকারের ন্যায়ের ভিত্তি।