দুই হৃদয়ের দূরত্ব
গল্প: দুই হৃদয়ের দূরত্ব
লেখক: খালিল জিবরান
মূল ভাষা: আরবি
প্রকাশকাল: আনুমানিক ১৯২০
ধরন: দার্শনিক প্রেম ও আত্মজ্ঞানভিত্তিক গল্প
দীপ্ত ও লায়লা — দুই তরুণ-তরুণী। তারা ছোটবেলা থেকেই একই পাহাড়ি গ্রামে বড় হয়েছে। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গভীর বন্ধন তৈরি হয়, এমনকি তারা প্রতিজ্ঞা করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একসঙ্গে থাকবে।
কিন্তু একদিন গ্রামের প্রবীণ একজন বলল,
“যদি তোমরা সত্যিকারের ভালোবাসো, তাহলে কিছু সময় দূরে থেকো। হৃদয়ের গভীরতা দূরত্বেই বোঝা যায়।”
তারা অবাক হয় —
— “ভালোবাসলে দূরে থাকা কেন?”
বৃদ্ধ বলেন:
“যে গাছ খুব ঘন হয়ে একে অপরের গায়ে গায়ে বেড়ে ওঠে, তাদের শিকড় একে অপরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু যে গাছ একটু দূরে দূরে বেড়ে ওঠে, তারা স্বাধীনভাবে আকাশ ছুঁতে পারে।”
বৃদ্ধের কথা লায়লার মনে গেঁথে যায়।
লায়লা সিদ্ধান্ত নেয়, কিছু সময়ের জন্য শহরে চলে যাবে — নিজের ভেতরের স্বপ্ন পূরণ করতে। দীপ্ত ব্যথিত হলেও সম্মতি দেয়।
সময় গড়িয়ে যায় — এক বছর, দুই বছর...
দুজনেই আলাদা হয়ে নিজেকে গড়ে তোলে —
লায়লা হয় একজন চিত্রশিল্পী, আর দীপ্ত হয় একজন দার্শনিক কবি।
তারা একে অপরকে ভুলে যায় না।
বরং প্রতিটি সৃষ্টি — কবিতা, ছবি — একে অপরকে নিয়েই হয়ে ওঠে।
তিন বছর পর একদিন তারা আবার ফিরে আসে সেই পুরনো পাহাড়ি গ্রামে।
চোখে চোখ পড়তেই এক অদ্ভুত শান্তি নেমে আসে।
দূরত্ব তাদের হৃদয়কে দূরে ঠেলে দেয়নি — বরং ভালোবাসাকে আরও পরিপূর্ণ করেছে।
শিক্ষা:
প্রকৃত ভালোবাসা কখনো দূরত্বে ভেঙে পড়ে না।
মাঝে মাঝে আলাদা থাকা মানেই ভেঙে যাওয়া নয়, বরং নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সুযোগ।
একে অপরকে নিঃশর্ত সম্মান দেওয়াই হচ্ছে ভালোবাসার প্রকৃত রূপ।