সান্তা ক্লজের বুটজোড়া
গল্পের নাম: সান্তা ক্লজের বুটজোড়া
মূল লেখক: ফিওদর দস্তইয়েভস্কি (Fyodor Dostoevsky)
বাংলা অনুবাদ ও উপস্থাপন: মোঃ জয়নাল আবেদীন
১. শীতের গল্পের শুরু
এক ভয়ানক শীতের রাত, পেতার্সবুর্গ শহরের গলির মধ্যে হাঁটছিল এক ছোট ছেলে। বয়স বড়জোর আট। তার গায়ে ছিল ছেঁড়া জামা, পায়ে কোনো জুতা নেই, আর ঠাণ্ডায় তার ছোট্ট হাত দুটি নীল হয়ে গিয়েছে।
সে জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিল—বাড়ির ভেতরে উষ্ণতা, আলো, হাসি, উৎসব আর খাবারের বাহার।
কিন্তু তার জন্য কিছুই ছিল না।
সে হঠাৎ ভাবল, “সান্তা ক্লজ কি সত্যিই আসে?”
তার ছোট্ট মনে প্রশ্ন—“আমার জন্য কিছু নিয়ে আসবে সে?”
২. ছোট্ট ছেলেটির স্বপ্ন
শীতের রাতে, না খেয়ে, না ঘুমিয়ে সে একটি গুদামের পাশে বসে পড়ল। ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে সে ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমের মধ্যে সে স্বপ্ন দেখল—
এক সাদা দাড়িওয়ালা লোক তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। গায়ে লাল কাপড়, কাঁধে বস্তা।
লোকটি বলল,
“আমি সান্তা নই, আমি ঈশ্বরের দূত। তুমি আর কষ্ট পাবে না।”
ছেলেটি দেখল, সে এক উষ্ণ ঘরে আছে। সেখানে খেলনা, খাবার, আর পাশে এক মা—যে তাকে জড়িয়ে ধরেছে।
৩. বাস্তবতা ও বেদনা
পরদিন সকালে পত্রিকায় ছোট্ট একটি খবর ছাপা হয়—
“রাতের ঠাণ্ডায় এক ছেলেশিশুর মৃত্যু।”
লোকেরা দু’দণ্ড থেমে পড়ে খবরটি পড়ে, তারপর তাদের জীবনে ফিরে যায়।
দস্তইয়েভস্কির ভাষ্যে
এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু গভীর গল্পটি রাশিয়ার মহান ঔপন্যাসিক ফিওদর দস্তইয়েভস্কি রচনা করেন, যাতে ফুটে ওঠে সমাজের অবহেলিত শিশুদের দুর্দশা, আমাদের সহানুভূতির অভাব, এবং ঈশ্বরের করুণা।
দস্তইয়েভস্কির গল্পে বারবার উঠে আসে—ভোগ নয়, সহানুভূতি মানুষের সত্যিকারের পরিচয়।
শিক্ষা:
এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়—একটি ছোট উপহার, একটি ভালোবাসার স্পর্শ, একটুখানি সময়—এগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সত্যিকারের মানবতা।