ভালো অভ্যাসে সুখী জীবন
বই পড়া: আত্মউন্নয়নের সহজ পথ
-
মোঃ জয়নাল আবেদীন
জীবনে উন্নতি এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশের জন্য জ্ঞান ও চিন্তাশক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ নানা মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে—শিক্ষা গ্রহণ, অভিজ্ঞতা, অনুশীলন—কিন্তু সবচেয়ে সহজ, কার্যকরী এবং স্থায়ী পথ হলো বই পড়া। বই শুধু তথ্য ও জ্ঞান দেয় না, এটি আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রসারিত করে, নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ করে, এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
বইয়ের মাধ্যমে আমরা শুধু নিজের অভিজ্ঞতাই অর্জন করি না; আমরা অন্য মানুষের জীবন, চিন্তাভাবনা ও সংগ্রামের সঙ্গে পরিচিত হই। ইতিহাস, বিজ্ঞান, সাহিত্য ও আত্মউন্নয়নমূলক বই আমাদের এমন জ্ঞান দেয় যা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা যায়। মনিষীদের জীবন থেকে শুরু করে, হেলেন কেলার ও নেলসন ম্যান্ডেলার মতো মানুষদের উদাহরণ প্রমাণ করে, বই পড়া মানুষের জীবনে কতটা পরিবর্তন আনতে পারে।
এই প্রবন্ধে আমরা দেখব, কিভাবে বই পড়া আত্মউন্নয়নের পথ হিসেবে কাজ করে, মনিষীদের জীবনের গল্প, বিদেশি মোটিভেশনাল গল্প, গুরুত্বপূর্ণ বাণী এবং ধাপে ধাপে সফল হওয়ার কৌশলগুলো আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে।
আত্মউন্নয়নের জন্য নানা পথ আছে। তবে তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ এবং প্রভাবশালী একটি মাধ্যম হলো বই পড়া। বই আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে, চিন্তাধারাকে প্রসারিত করে এবং ব্যক্তিত্বকে গঠিত করে। এটি এমন একটি বিনিয়োগ যা কখনো ক্ষতি করে না; বরং যত বেশি পড়া হয়, তত বেশি লাভ হয়।
বই পড়ার মাধ্যমে আমরা অন্য মানুষের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান থেকে শিক্ষা নিতে পারি। ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, বিজ্ঞান, সাহিত্য বা জীবনদর্শন—প্রতিটি বই আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি শেখায়। উদাহরণস্বরূপ, মহাত্মা গান্ধীর জীবনের ওপর লেখা বইগুলো আমাদের শেখায়, ধৈর্য, সততা ও ন্যায়পরায়ণতা কেমনভাবে জীবনের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করে। Similarly, স্টিফেন কভির “The 7 Habits of Highly Effective People” আমাদের শেখায় কার্যকরী জীবনধারা ও সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল।
বই পড়া কেবল জ্ঞান বাড়ায় না, মননশীলতাও বৃদ্ধি করে। যখন আমরা কোনো চরিত্রের চিন্তা, সমস্যার সমাধান বা যাত্রার কাহিনী পড়ি, তখন আমরা নিজেদের জীবনের বাস্তবতা এবং সমস্যা সমাধানের উপায় চিন্তা করতে শুরু করি। এটি আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
আত্মউন্নয়নের জন্য বই পড়ার একটি বড় সুবিধা হলো, এটি খুবই সহজ ও সাশ্রয়ী। একটি ছোট সময়ের মধ্যে, প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট বা ১ ঘণ্টা পড়লেই আমরা আমাদের জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে পারি। এছাড়া, বই পড়ার মাধ্যমে আমাদের ভাষা ও ভাব প্রকাশের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়, যা ব্যক্তিত্বের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞ ও মনীষীরা বই পড়াকে জীবনধারার অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। রবার্ট এফ কেনেডি একবার বলেছিলেন, “পড়ার মাধ্যমে আমরা জীবনের সব অভিজ্ঞতা একসাথে অর্জন করতে পারি।” এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, বই পড়া আমাদের জীবনের প্রতিটি
বই পড়া আত্মউন্নয়নের সহজ ও কার্যকরী পথ। এটি শুধু জ্ঞান বৃদ্ধি করে না, বরং চিন্তাশীলতা, মূল্যবোধ, ভাষা দক্ষতা এবং জীবন পরিচালনার ক্ষমতাকেও সমৃদ্ধ করে। প্রতিদিন কিছু সময় বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা মানে নিজেকে আরও শক্তিশালী, জ্ঞানী ও সচেতন মানুষে পরিণত করা। তাই বই পড়া কখনও অবহেলা করা উচিত নয়; বরং এটি জীবনের অমূল্য সহচর হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।
মনিষীদের জীবন থেকে গল্প
১. মহাত্মা গান্ধী
মহাত্মা গান্ধী মাত্র একজন সাধারণ আইনজীবী ছিলেন, কিন্তু তার বই পড়ার অভ্যাস তাকে বিশ্বমানবতার আইকন বানায়। ছোটবেলায় তিনি ইংরেজি সাহিত্য ও ইতিহাসের বই পড়তেন। বইয়ের মাধ্যমে তিনি শিখেছিলেন অসহিংসা ও সত্যের শক্তি। গান্ধীর জীবনে দেখা যায়, তিনি যে নীতি বা চিন্তা অবলম্বন করেছেন, তার মূল ভিত্তি ছিল বই থেকে পাওয়া শিক্ষা। একবার তিনি লিখেছেন, “পড়ার মাধ্যমে আমরা অন্যের জীবনকে নিজের জীবনের সঙ্গে মেলাতে পারি।”
২. ডা. এ. পি. জে. আবদুল কালাম
ভারতের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও রাষ্ট্রপতি ডা. আবদুল কালামের জীবনও বই পড়ার মাধ্যমে গঠিত। তিনি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে বই পড়তেন। তার আত্মজীবনীতে তিনি উল্লেখ করেছেন, বই পড়ার অভ্যাস তার চিন্তাভাবনার জগৎকে বিস্তৃত করেছে এবং জীবনে বড় লক্ষ্য অর্জনের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
৩. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটবেলা থেকেই বই পড়তেন। তাঁর সাহিত্য, দর্শন ও জীবনদর্শনমূলক বই পড়ার অভ্যাসই তাঁকে বিশ্বকবি ও মনিষী বানায়। তিনি দেখেছেন, বই পড়া শুধু জ্ঞান নয়, জীবনের দৃষ্টিভঙ্গিও পরিবর্তন করে।
৪. আলবার্ট আইনস্টাইন
বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন ছোটবেলা থেকে বই পড়ার প্রতি অত্যন্ত উৎসাহী ছিলেন। তিনি কেবল বিজ্ঞান নয়, দর্শন ও সাহিত্য সম্পর্কেও বই পড়তেন। বই পড়ার মাধ্যমে তার কল্পনা শক্তি এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বিকশিত হয়েছিল। আইনস্টাইন একবার লিখেছেন, “পড়ার মাধ্যমে আমরা সেই সব দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত হই যা আমরা কখনো সরাসরি দেখতে পাইনি।” তার জীবনে বই পড়ার অভ্যাসই তাকে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পথে প্রেরণা যুগিয়েছে।
৫. হেলেন কেলার
হেলেন কেলার ছোটবেলায় অন্ধ ও বধির হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু বই পড়া তার জীবনের আলো হয়ে উঠেছিল। তার শিক্ষিকা অ্যানি স্যালিভান তাকে মুদ্রিত অক্ষর ও স্পর্শকাঠের মাধ্যমে বই পড়তে শিখিয়েছিলেন। বইয়ের মাধ্যমে হেলেন কেলার শুধু জ্ঞান অর্জন করেনি, বরং জীবনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও স্বনির্ভরতা শিখেছে। তিনি লিখেছিলেন, “বই হলো আমার চোখ, যা আমাকে দুনিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।”
৬. মার্ক টোয়েন
মার্ক টোয়েন, যারা ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টম সয়্যার’ রচনা করেছেন, ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার ভীষণ অনুরাগী ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সাহিত্যের বই পড়ে কল্পনাশক্তি ও লেখার দক্ষতা বিকশিত করেছিলেন। বইয়ের প্রতি এই ভালোবাসা তাকে বিশ্বসাহিত্যের একজন অমর লেখক বানিয়েছে।
৭. নেলসন ম্যান্ডেলা
দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাগারে থাকাকালীন সময় বই পড়তেন। বই পড়ার মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বিকশিত করেছেন, যা পরবর্তীতে দেশের জন্য তাঁর নেতৃত্বকে শক্তিশালী করেছে। ম্যান্ডেলা একবার বলেছিলেন, “বই পড়া আমাকে নিজের সীমাবদ্ধতার বাইরে চিন্তা করতে শিখিয়েছে।”
এই গল্পগুলো দেখায়, মনিষীরা কেবল জ্ঞানই অর্জন করেনি, বইয়ের মাধ্যমে চিন্তাভাবনা, জীবনদৃষ্টি এবং শক্তি লাভ করেছেন। বই পড়া তাদেরকে আত্মউন্নয়নের পথে এগিয়েছে।
মনিষীদের জীবন প্রমাণ করে, বই পড়া কেবল জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম নয়, এটি আত্মউন্নয়নের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। তাদের জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি, বই পড়ার অভ্যাস আমাদের চিন্তাধারা, মূল্যবোধ, নেতৃত্বের ক্ষমতা এবং ব্যক্তিত্বকে কতটা সমৃদ্ধ করতে পারে। তাই প্রতিদিন কিছু সময় বই পড়া অভ্যাস করা আত্মউন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
“বই পড়া: আত্মউন্নয়নের সহজ পথ” শিরোনামের প্রবন্ধের সাথে সম্পর্কিত মনিষীদের বাণী দেওয়া হলো:
-
মহাত্মা গান্ধী:
"পড়ার মাধ্যমে আমরা অন্যের জীবনকে নিজের জীবনের সঙ্গে মেলাতে পারি।" -
ডা. এ. পি. জে. আবদুল কালাম:
"বই পড়া আমাদের কল্পনা শক্তি ও স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।" -
হেলেন কেলার:
"বই হলো আমার চোখ, যা আমাকে দুনিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।" -
নেলসন ম্যান্ডেলা:
"বই পড়া আমাকে নিজের সীমাবদ্ধতার বাইরে চিন্তা করতে শিখিয়েছে।" -
আলবার্ট আইনস্টাইন:
"পড়ার মাধ্যমে আমরা সেই সব দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত হই যা আমরা কখনো সরাসরি দেখতে পাইনি।" -
ফ্রান্সিস বেকন:
"পড়ার মাধ্যমে মানুষ চিন্তাশীল হয়, আর চিন্তাশীল মানুষই নিজেকে উন্নত করতে পারে।" -
ডেল কার্নেগি:
"পড়ার অভ্যাস একজন মানুষের জীবনের মান উন্নয়নের সবচেয়ে সহজ উপায়।" -
ওপেনহাইমার:
"বই মানুষের চেতনা এবং জ্ঞানকে সীমাহীন করে।"
বই পড়ার মাধ্যমে আত্মউন্নয়নে ধাপে ধাপে উন্নতি
ধাপ ১: বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা
-
প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় বই পড়ার জন্য নির্ধারণ করুন।
-
শুরুতে ছোট বই বা সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধ দিয়ে শুরু করুন।
-
ধীরে ধীরে দীর্ঘ ও জটিল বই পড়ার দিকে এগিয়ে যান।
ধাপ ২: নিজের আগ্রহ অনুযায়ী বই নির্বাচন
-
সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, আত্মউন্নয়ন—যে বিষয় আপনার আগ্রহের সাথে মিলবে সেই বই নির্বাচন করুন।
-
আগ্রহ থাকলে পড়া সহজ হয় এবং শেখার প্রেরণা বাড়ে।
ধাপ ৩: পড়ার সময় মনোযোগী হওয়া
-
পড়ার সময় অন্য কিছু ভাববেন না।
-
গুরুত্বপূর্ণ অংশের নোট নিন বা মেমো লিখে রাখুন।
-
বইয়ের মূল বার্তা বুঝে তা জীবনে প্রয়োগের চেষ্টা করুন।
ধাপ ৪: বইয়ের জ্ঞান প্রয়োগ করা
-
প্রতিদিন পড়া জ্ঞানকে ছোট ছোট বাস্তব জীবনের কাজে প্রয়োগ করুন।
-
উদাহরণ: বইয়ে পড়া সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল আজই কাজে লাগান।
-
প্রয়োগ না করলে জ্ঞান শুধুই তাত্ত্বিক থেকে যায়।
ধাপ ৫: বিভিন্ন ধরনের বই পড়া
-
এক ধরনের বই পড়লে জ্ঞান সীমিত থাকে।
-
বিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, আত্মউন্নয়ন—বিভিন্ন বই পড়লে চিন্তাভাবনা প্রসারিত হয়।
ধাপ ৬: শিক্ষণীয় চিন্তা ও বাণী লিখে রাখা
-
পড়ার সময় মনিষীদের বাণী ও শিক্ষণীয় কথা লিখে রাখুন।
-
পরে তা অনুশীলন এবং অনুপ্রেরণার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
ধাপ ৭: বই পড়াকে জীবনের অংশ বানানো
-
বই পড়াকে শুধু শখ নয়, নিয়মিত অভ্যাস হিসেবে গ্রহণ করুন।
-
সময়ের সাথে এটি জীবনের চেতনা ও ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করবে।
বই পড়ার মাধ্যমে আত্মউন্নয়নে সফল হতে হলে প্রথমে নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, মনোযোগীভাবে পড়তে হবে, জ্ঞানকে প্রয়োগ করতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার মাধ্যমে চিন্তাধারাকে প্রসারিত করতে হবে। প্রতিদিনের ছোট অভ্যাসই ধীরে ধীরে বড় উন্নয়নে পরিণত হয়।
স্টিভ নামের এক ছেলে আমেরিকায় বড় হচ্ছিল। ছোটবেলায় তার পড়াশোনায় আগ্রহ খুব কম ছিল। সে বেশি সময় কাটাতো ভিডিও গেম ও বন্ধুদের সঙ্গে খেলায়। কিন্তু একদিন তার স্কুলের শিক্ষক তাকে একটি ছোট বই উপহার দিল—ডেল কার্নেগির লেখা “How to Win Friends and Influence People”।
প্রথমে স্টিভ বই পড়ার প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। কিন্তু শিক্ষক পরামর্শ দিলেন প্রতিদিন মাত্র ২০ মিনিট বই পড়ার অভ্যাস করতে। ধীরে ধীরে স্টিভ বইয়ের জগতে প্রবেশ করল। বইতে লেখা কৌশল, জীবনদৃষ্টি ও মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার কৌশল স্টিভের চোখ খুলে দিল।
কিছু মাসের মধ্যে তার আচরণ পরিবর্তন হলো। সে তার আত্মবিশ্বাস বাড়াল, বক্তৃতা করার সাহস পেল এবং স্কুলে গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টে নেতৃত্ব দিতে শুরু করল। কলেজে গেলে স্টিভ বই পড়াকে অভ্যাস বানিয়ে নিল, এবং আজ সে একজন সফল উদ্যোক্তা ও মোটিভেশনাল স্পিকার।
স্টিভের গল্প প্রমাণ করে, বই পড়া শুধুই জ্ঞান নয়, এটি আত্মউন্নয়নের শক্তিশালী হাতিয়ার। প্রতিদিন ছোট সময় বই পড়লেই জীবনে বড় পরিবর্তন সম্ভব।
বই পড়া কেবল জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম নয়; এটি আত্মউন্নয়নের সবচেয়ে সহজ, প্রভাবশালী ও স্থায়ী উপায়। মনিষীদের জীবন, হেলেন কেলার বা নেলসন ম্যান্ডেলার গল্প এবং স্টিভের মতো বিদেশি উদাহরণ প্রমাণ করে, বই পড়া মানুষের চিন্তাশক্তি, মননশীলতা, আত্মবিশ্বাস ও মূল্যবোধ বিকশিত করে।
যুক্তি হিসেবে বলা যায়, বাস্তবে আমরা যেসব সফল মানুষ দেখি, তাদের অধিকাংশের জীবনে বই পড়ার অভ্যাস একটি সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ কেবল জ্ঞানই অর্জন করে না, বরং জীবনের সমস্যার সমাধান, নৈতিক শিক্ষা, নেতৃত্বের গুণাবলী ও সৃজনশীল চিন্তাভাবনাও শেখে। প্রতিদিন নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস, যদিও ছোট মনে হয়, তা ধীরে ধীরে জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে এবং ব্যক্তিত্বকে গড়ে তোলে।
সুতরাং, বই পড়াকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গ্রহণ করা একেবারে অপরিহার্য। এটি প্রতিটি মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজ, সাশ্রয়ী এবং শক্তিশালী পথ নিজেকে উন্নত, সচেতন ও সফল মানুষে পরিণত করার।